শেরপুরের উন্নয়নের দাবিতে ১৪ কি.মি মানববন্ধন...

শেরপুরের উন্নয়নের দাবিতে গোটা শহরজুড়েই মানববন্ধন


মেডিকেল কলেজ, রেললাইন ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ শেরপুরের সার্বিক উন্নয়নের দাবিতে শেরপুর প্রেসক্লাবের ডাকে সারা শহরজুড়েই নাগরিক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ গ্রহণ করেন সবদল ও শ্রেণী পেশার মানুষ।

শেরপুর জেলা শহরে আজ ১৫ মে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী এ মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলাবাসির প্রাণের দাবিগুলোর মধ্যে মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, রেললাইন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন করা হয়নি। তাই উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া শেরপুর জেলার ন্যায্য উন্নয়ন ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পাচঁদফা দাবি আদায়ের জন্য সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে নাগরিক মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়ছিলো শেরপুর প্রেসক্লাব। এতে জেলাবাসি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে। সকাল ১০ টার মধ্যেই গোটা জেলা শহরজু্ড়ে লোকে লোকারন্ন হয়ে পড়ে। মানববন্ধন রূপ নেয় জনসমূদ্রে।
অংশগ্রহণকারিরা বলেন প্রেসক্লাব ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে।
শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা বলেন, দাবি আদায় না করে শেরপুরের সাংবাদিক সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ আন্দোলন থেকে সরে আসবেনা।
জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে শেরপুরকে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করা হলেও ৪১ বছর পর সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জেলার প্রায় ১৬ লাখ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফলে শেরপুরবাসী অনেক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এসময় জেলায় উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, উচ্চ শিক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়, যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেল নেটওয়ার্কের সংযোগ, পর্যটন খাতের উন্নয়ন এবং ব্যবসা-বানিজ্য প্রসার লাভে অর্থনৈতিক জোন নির্মাণের দাবী করেন বক্তাগণ। শেরপুরের ইতিহাসে রাজনৈতিক সমাবেশ ছাড়া সর্বোচ্চ জনসম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা গেছে এই মানববন্ধনে।

শেরপুর প্রেসক্লাব ঘোষিত পাঁচ দফা হচ্ছে -

১. শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন: শেরপুর জেলার শিক্ষার হার জাতীয় গড়ের তুলনায় পিছিয়ে থাকায় শিক্ষা খাতে বিশেষ মনোযোগ দেয়া জরুরি। পাশের জেলাগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও রাজনৈতিক উপেক্ষার কারণে শেরপুর পিছিয়ে আছে। তাই কৃষি, প্রযুক্তি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে একটি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন সময়ের দাবি।

২. স্বাস্থ্যসেবা: শেরপুরের প্রায় ঘোল লাখ মানুষসহ পাশ্ববর্তী জেলা জামালপুর, কুড়িগ্রাম ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের অনেক মানুষ ভৌগোলিক কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে শেরপুরে আসে। অথচ জেলা সদর হাসপাতালটি জনবল ও আধুনিক সরঞ্জামের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। তাই আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ অথবা বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

৩. কৃষি ও শিল্প: খাদ্যউৎপাদনে শেরপুর দেশের অন্যতম হলেও কৃষি শিল্প গড়ে ওঠেনি। তুলশীমালা ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা হয়নি। এজন্য একাধিক আধুনিক হিমাগার স্থাপন, আবহাওয়া অফিস এবং শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) কে পূর্ণাঙ্গ কৃষি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানানো হয়েছে। 

৪. যোগাযোগ: সুদীর্ঘদিন ধরেই জেলার মানুষ রেলপথ স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছে, যা কৃষিপণ্য পরিবহন ও অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত শেরপুরকে রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

৫. পর্যটন: ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলশীমালার সুগন্ধে’ এই শ্লোগানে পরিচিত শেরপুরে গজনী অবকাশ, মধুটিলা ইকোপার্কসহ একাধিক সম্ভাবনাময় এলাকা থাকলেও কোনো টেকসই উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পর্যটন বিকাশে আধুনিক হোটেল-মোটেল, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, বন সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করতে হবে।

সোর্স- dailyinqilab

-

Post a Comment

Previous Post Next Post