কলেজ জীবন থেকেই বিসিএসের স্বপ্ন, মাস্টার্স শেষের আগেই শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশ
শৈশব ও শিক্ষাজীবন-
গ্রামের পরিবেশেই বেড়ে ওঠেন রিফাত। তাঁর বাবা মো. রহুল আমিন বাবুল একজন শিক্ষক, আর মা জোসনা বেগম গৃহিণী। সীমিত আয়ের সংসার হলেও বাবা-মা কখনো তাঁর পড়াশোনায় কোনো কমতি রাখেননি। শৈশব কেটেছে খেলাধুলা আর মায়ের কাছে গল্প শুনে। সন্ধ্যায় হারিকেনের আলোয় পড়তে বসা এবং বাবার মুখে ‘Reading for pleasure’ শুনে শেখার অভ্যাস গড়ে তোলেন তিনি।
শিক্ষাজীবনের শুরু কাকিলাকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর কাকিলাকুড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করেন, যা তখনকার শ্রীবরদী থানায় বিরল সাফল্য ছিল। এরপর ভর্তি হন ঢাকা তেজগাঁও বিএএফ শাহীন কলেজে, তবে পরে ফিরে আসেন গ্রামে এবং বকশীগঞ্জ সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ও বিসিএস প্রস্তুতি-
প্রথমে বুয়েটে ভর্তির স্বপ্ন ছিল তাঁর, এজন্য ঢাকার ফার্মগেটে কোচিংও করেন। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে। শিক্ষাজীবনে কখনো কোনো ক্লাস মিস করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দারুণ ফলাফল অর্জন করেন—অনার্সে ষষ্ঠ স্থান এবং মাস্টার্সে ভৌত রসায়নে প্রথম স্থান অধিকার করেন। গবেষণার জন্য পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি; তাঁর গবেষণা আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যা গুগলে ‘Rifat Ahmed Research’ লিখে সার্চ দিলেই পাওয়া যাবে।
বিসিএস ক্যাডারে সফলতা-
কলেজ জীবন থেকেই বিসিএস ক্যাডারে আসার স্বপ্ন লালন করেছেন রিফাত। বিসিএস ক্যাডারদের জীবনযাপন দেখে তাঁরও আগ্রহ জন্মায়। সকাল থেকে বিকেল ক্লাস, সন্ধ্যায় টিউশনি, আর রাতভর বিসিএস প্রস্তুতির বই নিয়ে অধ্যয়ন—এভাবেই তিনি প্রস্তুতি নিয়েছেন।
প্রথমবারের প্রচেষ্টায়ই ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে চান। তিনি তাদের মোবাইলের ইতিবাচক ব্যবহার, শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চার জন্য উৎসাহিত করেন।
রিফাত আহমেদ বর্তমানে ‘Bcs Preparation’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ পরিচালনা করেন, যেখানে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পড়াশোনার জন্য অনুপ্রাণিত করেন। ভবিষ্যতে আরও শিক্ষার্থীদের সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি।
